জাতীয় নৃত্যনাট্য উৎসবে
ভেলুয়া সুন্দরী
পরিবেশনায়: বেনুকা ললিতকলা একাডেমী, ঢাকা।
২৯ জানুয়ারি রাত ৮টা
মূল মিলনায়তন, শিল্পকলা একাডেমি, ঢাকা
চট্টগ্রাম অঞ্চলের একটি সত্যি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমির সাধু-ভেলুয়া সুন্দরী কাহিনীর জন্ম। শ্রী দীনেশ চন্দ্র সেন-এর সম্পাদনায় ভেলুয়া নামে এ কাহিনী প্রকাশিত হয়েছিল। তবে কাহিনীটির প্রথম রচয়িতার নাম জানা যায়নি। নাটকে বর্ণিত ঘটনার স্থানগুলো এখনো পরিচিত। শাফলাপুর (শাপলাপুর) মইষাখালী (মহেশখালী) দ্বীপের একটি বন্দর। চট্টগ্রাম শহরের অনতিদূরে ‘ভেলুয়ার দীঘি’ এখনো ঘটনার স্বাক্ষীরূপে বিদ্যমান। মুনাফ কাজীর বাড়ী ছিল ‘সরইপাড়া’ গ্রামের কাজী পাড়ায়। সরইপাড়া গ্রাম চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার অন্তর্গত এবং ভোলা সওদাগরের বাড়ী কাট্টলী গ্রাম। যা সরইপাড়া গ্রামের কাছেই অবস্থিত। কর্ণফুলী নদী যার দেশীয় নাম কাইচ্যা নদী এখনো চট্টগ্রামের বুক চিরে প্রবাহমান।
মইষাখালী দ্বীপের শাফলা বন্দরের মালিক প্রতাপশালী ব্যক্তিত্ব মানিক সওদাগর-এর রাজকীয় পরিবারকে ঘিরে নাটকের কাহিনী আবর্তিত হয়। ছোট ছেলে আমির সাধু ছিল চাঁদের মত সুন্দর। একদিন কবুতর শিকার করতে গিয়ে সে ভেলুয়াকে বিয়ে করে নিয়ে আসে। ভেলুয়া তার মায়ের বড় বোনের কন্যা। সুখেই কাটছিল তাদের জীবন। কিন্তু একদিন নদীর ঘাটে পানি আনতে গেলে ভেলুয়াকে অপহরণ করে ভোলা সওদাগর, তখন আমির বাড়িতে ছিল না।
আমির ফিরে এসে ভেলুয়াকে না পেয়ে ভবঘুরে হয়ে যায়। এক সাধুবাবার আশ্রমে আশ্রয় নিয়ে সারিন্দা বাজানোর সাধনা করতে লাগলো। বাউল বেশে আমির পথে পথে সারিন্দা বাজাতে গিয়ে ভোলা সওদাগরের বাড়ীতে একদিন ‘ভেলুয়া’র দেখা পেল এবং সব ঘটনা জানতে পারলো। আমির মুনাফ কাজীর দরবারে বিচার চাইল। সুন্দরী বৌ দেখে কাজী আমিরকে নিরাশ করে নিজেই ভেলুয়াকে বিয়ে করতে আগ্রহী হয়ে জোর জবরদস্তি করে ভেলুয়াকে বন্দি করে রাখলো। রাগে-দুঃখে আমির বাবা-মা’র কাছে ফিরে এসে সব ঘটনা জানালো। আমিরের বাবা ১৪ ডিঙ্গা রণবহর সাজিয়ে যুদ্ধে রওনা হতে নির্দেশ দিলেন। যুদ্ধে আমিরের জয় হলো। কিন্তু বিজয়ী আমির দেশে ফেরার পথে ভেলুয়ার মৃত্যু হল। আর আমির সাধু ভেলুয়ার কবরের কাছে গিয়ে স্মৃতি রোমন্থন করতে লাগল।
এই নাটকের পাণ্ডুলিপি তৈরি করেছেন ড. আশরাফ সিদ্দিকী। গোলাম মোস্তফা খান-এর নৃত্য পরিকল্পনা ও পরিচালনায় নাটকের বিভিন্ন চরিত্র রূপায়নে আছেন মঞ্জুর আহমেদ, চিত্রাদাস টিনা, কামরুজ্জামান সেতু, মফিজ, ইলিয়াস হায়দার, মিতু হোম রায়, সেলিনা হক শেলী, গোলাম মোস্তফা খান’সহ আরও অনেকে।
সাতদিন/এমজেড/২৮জানুয়ারি২০১৫